হাতির দাঁতের কাজের জন্য মুর্শিদাবাদ ছিল বিখ্যাত। সেই নবাবী আমলে ওই গজদন্ত
শিল্পের প্রসার ঘটেছিল মুর্শিদাবাদে। কথিত আছে, শৌখীন নবাব সুজাউদ্দিন টুথ-পিক্ অর্থাৎ
দাঁতের কাঠি বানানোর জন্য দিল্লী থেকে এক গজদন্ত শিল্পীকে মুর্শিদাবাদে আনিয়েছিলেন।
সেই গজদন্ত শিল্পী বাস করতেন জিয়াগঞ্জের কাছে এনাতুলীবাগে। পাছে কেউ শিখে নেয় বলে সেই
শিল্পী ঘরের দরজা বন্ধ করে হাতির দাঁতের কাজ করতেন।
কিন্তু তুলসী খাটুম্বা নামে তাঁর এক শিষ্য বন্ধ দরজার ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে
দেখে হাতির দাঁতের কাজ শিখে নিয়েছিলেন। তুলসী খাটুম্বা মুর্শিদাবাদের গজদন্ত শিল্পীদের
আদিগুরু হিসাবে আজও সম্মান পেয়ে থাকেন। বর্তমানে গজদন্ত শিল্প অবলুপ্ত। বন্যপ্রাণী
সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী হাতির দাঁত মজুত ও সংগ্রহ করা দন্ডনীয়। শিল্পীদের বেশির ভাগ থাকতেন
বহরমপুরের খাগড়া, জিয়াগঞ্জ ও এনাতুলীবাগে। দেশ বিদেশে একসময় মুর্শিদাবাদের হাতির দাঁতের
কাজের প্রচুর সুনাম ও চাহিদা ছিল। হাজারদুয়ারি সংগ্রহশালায় গজদন্ত শিল্পের নিদর্শন
এখনও বর্তমান রয়েছে। গজদন্ত শিল্পীদের অনেকেই তাদের জীবিকা অর্জনের বিকল্প হিসাবে দারুশিল্প
ও শোলাশিল্পকে বেছে নিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment