পলাশীর যুদ্ধের কথা মনে পড়লে আম বাগানের কথা মনে আসে।
পলাশীর ওই আম বাগানের নাম ছিল লক্কাবাগ বা লক্ষবাগ। প্রায় এক লক্ষ আমগাছ ছিল বলে
একে লক্ষবাগ বা লাখবাগও বলা হোত। বাগানটির দৈঘ্য ছিল ১৬০০ হাত, চওড়া ৬০০ হাত। বাগানের চারদিকে মাটির বাঁধ দেওয়া ছিল যাতে বানের সময়
ভাগিরথীর জল না প্রবেশ করে। বাঁধের পাশে ছিল সামান্য খাল। বাগানের উত্তর পশ্চিম কোণে
নদীর ধার ঘেঁসে ছিল নবাবদের শিকারের জন্য তৈরি একটা ঘর। তার চারদিকে ইটের প্রাচীর
ছিল। ওই বাগানেই ইংরেজ সৈন্য ২২ শে জুন রাতে শিবির করে বিশ্রাম নিয়েছিল। পরের দিন
অর্থাৎ ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন ওই আম বাগানের ভিতর থেকেই তারা যুদ্ধ পরিচালনা করেছিল।
বাগানের শেষ আম গাছটি ১৮৭৯ সালে শুকিয়ে যায়। গাছটি কেটে
পলাশীর যুদ্ধের নমুনা হিসাবে বিলাতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ছোট ছোট আসবার পত্র তৈরি
করে সেখানে তা চড়া দামে বিক্রি হয়। সেই জায়গায় একটি সাদা মার্বেলের পাথরের
জয়স্তম্ভ নির্মাণ হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল বাংলা সরকার ১৮৮৩ সালে এটি স্থাপনা করেন।
পরে ১৯০৯ সালে লর্ড কার্জনের আদেশে তার কিছু দূরে
পূর্বদিকে উঁচু করে মনুমেন্ট স্থাপনা করা হয়। পুরানো মনুমেন্টটা এখন আর নেই। আম
বাগান,
পলাশী যুদ্ধক্ষেত্র সব কিছুই আজ ভাগিরথী নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে।
No comments:
Post a Comment