মুর্শিদাবাদ জেলায় এপর্যন্ত যে কটি ভূমিকম্প আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসাত্মক ১৮৯৭ সালের ভূকম্পন।
১২ জুন শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে পবিত্র মহরমের দিন এই ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল। এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তৎকালীন আসামের রাজধানী শিলং ও তারপাশে গোয়ালপাড়া অঞ্চল। রিকটার স্কেলে এই ভূকম্পের তীব্রতা ছিল ৮.৭। আসামসহ ত্রিপুরা, সমস্ত অবিভক্ত বঙ্গদেশে এই ভূকম্পন ছড়িয়ে পড়েছিল। ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব ৫ মিনিট হলেও প্রবলভাবে অনুভূত হয় ২ মিনিট।
সেই সময়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায় – বহরমপুর, লালবাগ, বালুচর (বর্তমান জিয়াগঞ্জ) এবং আজিমগঞ্জ এই চারটি জায়গা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখানকার কোন বড় বাড়ি আস্ত ছিল না। ভূমিকম্পে জেলায় মারা যান মোট ৩৪ জন। তার মধ্যে আজিমগঞ্জে ১১ জন, লালবাগে ৬ জন, জঙ্গিপুর মহকুমায় ৫ জন, কাশিমবাজারে ২ জন ও বহরমপুরে ১০ জন।
এই ভূমিকম্পে সেই সময় বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন গ্রতিগ্রস্ত হয়েছিল যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- নিজামতকেল্লা সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বহরমপুরের ব্যারাক অঞ্চলের একটি দোতলা বাড়ি সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়, কৃষ্ণনাথ কলেজের (তখন বহরমপুর কলেজ) টাওয়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বহরমপুর গ্রান্টহল বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়, নিউ প্যালেস-এর তিনতলা ভেঙে পড়ে, ইমামবাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আস্তাবলের উপরে সুরম্য বাংলো ধূলিসাৎ হয়, কাটরা মসজিদ-এর দুটি গম্বুজ সম্পূর্ণ ভেঙে যায় বাকি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, খেরুর মসজিদ-এর প্রধান গম্বুজটি ভেঙে যায়, কাশিমবাজার বড় রাজবাড়ি ক্ষতিগস্ত হয় এমনকি রানী স্বর্ণময়ীর খাসকামরা ধূলিসাৎ হয়েছিল, আজিমগঞ্জের একমাত্র হিন্দু স্থাপত্য রীতির মন্দিরটি ধ্বংস হয়ে যায়, হাজারদুয়ারীর ভেতরের অনেক আসবারপত্র ভেঙে যায়।
উল্লেখ্য রানী স্বর্ণময়ী ও নবাব হোসেন আলি মির্জা দৈবক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। দুজনে আর কোনদিন রাজ প্রাসাদে বাস করেননি। অস্থায়ী তাঁবুতে বাস করেছেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত।
Sanghatik bhumikampa .Jatadur mone pore Sunil Gangopadhyay er Pratham Alo upanyase er barnana ache.
ReplyDelete