'সোঁদামাটি' সাহিত্য পত্রিকা ও 'ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ' ফেসবুক গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে এই ওয়েবসাইট।

‪‎‪‎‪‪জাহানকোষা কামান‬



১৬৩৭ সালে বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় জাহানকোষা তোপ নির্মিত হয়েছিল। সেই সময় ঢাকার নাম ছিল জাহাঙ্গীর নগর। মুঘল সম্রাট শাজাহানের রাজত্বকালে (১৬২৭-৫৮ সালে) বাংলার সুবাদার ছিলেন ইসলাম খাঁ। তাঁর অধীনস্থ দারোগা শের মহম্মদের অধীনে হরবল্লভ দাসের তত্ত্বাবধানে জনার্দন কর্মকার এই বিশাল জাহানকোষা নির্মাণ করেছিলেন।


১৭০৩ সালে মুর্শিদকুলি খাঁ বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুখসুদাবাদে (বর্তমানে মুর্শিদাবাদ) স্থানান্তরিত করার সময় সম্ভবত এই কামানটি নিয়ে আসেন। জাহানকোষার অর্থ হল বিশ্বধ্বংসী বা মতান্তরে বিশ্বজয়ী। জাহানকোষার দৈর্ঘ্য সাড়ে সতেরো ফুট, ওজন ২১২ মন। এটি নির্মাণে লোহা-সহ আরও সাতটি ধাতু ব্যবহৃত হয়েছিল। জাহানকোষার দু’দিকে তিনটি করে মোট ছ’টি বলয়, সামনে ও পিছনের অংশে সুন্দর অলঙ্করণ চোখে পড়ে। কামানের গায়ে ফার্সি ভাষায় লিখিত মোট ন’টি পিতলের ফলকে কামান নির্মাণের কাহিনী, রাজন্যবর্গের প্রশস্তি বর্ণিত হয়েছে। এতে এক বার গোলা নিক্ষেপ করতে আঠাশ সের বারুদ ব্যবহৃত হত।

কামানটি নবাবী আমলে লোহার চারটি চাকার উপর স্থাপিত ছিল। কালক্রমে কামানের পাশে একটি পাকুড় গাছ বড়ো হয়ে উঠলে জাহানকোষা তোপটি গাছে কাণ্ডে আটকে পড়ে। কেন্দ্র সরকার কামানটিকে কেটে বের করে আনে এবং বর্তমানে উঁচু জায়গায় রাখেন।


পাকুড় গাছের নিচে অবস্থিত জাহানকোষা কামান। ( ছবি : উইকিপিডিয়া )

বর্তমানে কামানটির অবস্থান মুর্শিদাবাদ শহরের গোবরানালার নিকটবর্তী তোপখানা গ্রামে। যে লোহার চাকাযুক্ত গাড়িতে কামানটি স্থাপিত ছিল তা বহু বছর আগেই ধ্বংস হয়েছে।

{ তথ্য সংগ্রহ : দীননাথ মণ্ডল }




শেয়ার করুন

No comments:

Post a Comment